শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

দুটি ছবি ক’টি কথা


কালিহাতির পৈচাশিক ঘটনার প্রতিবাদে কাল তিনজন মানুষকে হত্যা করা হলো, আমি সেই “বর্বর” ঘটনাটি উল্লেখ করতে বিব্রত বোধ করি।



শুধু এ টুকুই বলবো, আমি মুক্তিযুদ্ধকালীন অসংখ্য অনুরূপ ঘটনাকে কোনো অংশে খাটো করে দেখিনা, তবে কালিহাতির এই ঘটনা মুক্তিযুদ্ধকালীন ঘটনার চেয়ে কোনো অংশে খাটো নয়, আমি সেটাই বলছি। একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কী করে এই “বর্বর” কান্ড একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সংঘঠিত হতে পারে, সেটা আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে কুলোয় না!



আমার মনে হয়, স্বাধীন বাংলাদেশে পাঞ্জাবি পশুদের রয়ে যাওয়া উত্তরসুরীরা তাদের পূর্বপুরুষদের মতই চারিত্রিক দোষাবলী এখনও বহন করে। ওরা পাকিস্তানিদের ধর্ষণকামী বির্যৌত্থিত উত্তরপুরুষ। গত পয়তাল্লিশ বছর ধরে এ সুজলা-সুফলা বাংলার জল-হাওয়া ওদের পিতৃপুরুষদের কাছ থেকে প্রাপ্ত চরিত্রের কোনো পরিবর্তন ঘটাতে পারে নি। পারেনি মা আর মায়ের সম্ভ্রম রক্ষায় জাতি ধর্ম নির্বিশেষে এ দেশের সন্তানেরা কতবড় ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত, তার ধারণা ওদের অবর্জনাপুর্ন মস্তিস্কে ঢুকিয়ে দিতে।

কাজেই ওদের বিচারও হতে হবে বিশেষ ট্রাইবুনালে, নিয়মিত আদালতে নয়, এটাই সময়ের দাবি



সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ভ্যাট বিষয়ে সরকারের ডিগবাজির মূল কারণ পুলিশ

একটু পিছনের দিকে খেয়াল করলেই আমরা দেখতে পাই জুলাই থেকে শুরু হওয়া চলমান অর্থবর্ষে গত প্রায় আড়াই মাস ধরে টিউশন ফি এর বিপরীতে এই সারে সাত শতাংশ হারেভ্যাট বাবদ কর্তন হয়ে আসছিলো। নিঃসন্দেহে তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে নিয়মিত জমাও হয়ে আসছিল। কারণ মূসক কর্তন করা হলে তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকারী হিসেবে জমা দিতে হয়, এটাই আইন।  সে হিসেবে যেহেতু আড়াই মাস আগে থেকে ভ্যাট কর্তনের হারটি কার্য্যকরী হয়েছে, সুতরাং তা এক কথায় রাষ্ট্রের কোষাগারে নিয়মিত জমা হত, সেটা ধরে নেওয়া অমূলক নয়। 


হা, একথাও ঠিক, একই সাথে আন্দোলনও চলছিলো। তবে প্রথম দিকে একটু জোড়ালো থাকলেও গত সপ্তাহের শুরু অবধি সে আন্দোলন ব্যাপক জনগোষ্ঠির সমর্থন পায়নি এবং তা ছিল অতি মাত্রায় দূর্বল। এক কথায় সেটা হয়ে পড়েছিল বিচ্ছিন্ন আন্দোলন। আর এই রকম আর কিছুদিন গেলে সে আন্দোলন মিয়িয়ে যেতো সেটা সকলের বোধগম্য।


কিন্তু বিপত্তিটা বাধলো কখন, যখন, গত সপ্তাহের শেষদিকে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ গুলি চালায় আর বেশ কিছু শিক্ষার্থীর সাথে জনৈক শিক্ষককে গুলিবিদ্ধ করে আহত করে। শিক্ষকের গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিতে পারে নি। মেনে নিতে পারার কথাও নয়।


আহত শিক্ষকের রক্তাক্ত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হয়ে পরে "ভাইরাল"। ছড়িয়ে পরে সারা দেশে, দেশের বাইরেও।


ঠিক পরের দিনই আন্দোলন ব্যাপকতা পায়, ছড়িয়ে পড়ে বনানীর ভার্সিটি পল্লীতে, মিরপুরে, ধানমন্ডিতে, উত্তরায়। এর পরের দু-তিন দিন এখনও সবার চোখের সামনে ভাসছে। পুরো ঢাকা শহর প্রতিটি পল অনিশ্চয়ত আর আতংকের মধ্যে কাটিয়েছে, এই যেন কোথায় না কিভাবে আবার হিংসা ছড়িয়ে পড়ে! এই ভয়ে শহরবাসী ছিলেন ত্রস্ত। 


সুতরাং এ কথা খুবই স্পষ্ট, ইচ্ছে করেই হোক, সিদ্ধান্তের দুর্বলতার কারণেই হোক কিংবা কিছু সদস্যের অত্যুতসাহী ভূমিকার কারণেই হোক, ভ্যাট ইস্যুতে সরকারকে তার অবস্থান বদলাতে ক্রীড়ানক হিসেবে কাজ করছে পুলিশই !


প্রশ্ন হলো এইভাবে শহরবাসীকে গত চার-পাঁচ দিন ধরে যে আতঙ্কিত হয়ে প্র্রহর কাটাতে হলো কতিপয় পুলিশকর্মীর চাটুকারী সিদ্ধান্তের কারণে এর দায় কী পুলিশ নেবে কিংবা একটা চলমান আর গৃহীত ও স্বীকৃত সরকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে বাধ্য করে সরকারকে যে হেনস্তা হতে হলে এর জন্য দায়ী পুলিশকর্মীদের জবাবদিহিতার মুখোমুখি করা হবে না কেন?


রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

এতিমখানা ও দুটি প্রশ্ন!

কাগজে দেখছিলাম মাননীয় অর্থমন্ত্রী গত কয়েকদিন আগে কোথায় যেন বলেছেন "দেশে আর কোনো ভিক্ষুক নেই"। কোন তথ্য কিংবা জরিপের উপর নির্ভরতা নিয়ে জনাব মাল এই কথা বলেছেন, ঠিক জানা নেই। তবে কাঁচা-বাজার সব্জিবাজারের যে হালত! তাতে সহজেই অনুমেয় আসলেই দেশে কোনো ভিক্ষুক নেই, থাকার সুযোগ নেই। সেই অর্থে জনাব মাল যথার্তই বলেছেন, বলা চলে। কারণ দ্রব্যমূল্য যে স্তরে বর্তমানে বিরাজ করছে, তাতে দেশে কোনো "প্রকৃত ভিক্ষুক" থাকার কথা নয়, তারা হয় না খেতে পেয়ে মরে গেছে, না হয় মাননীয় বনমন্ত্রী যেমন বলেছিলেন "বাংলার রয়েল বেঙ্গল টাইগার ভারতে বেড়াতে গেছে", তেমনি প্রকৃত ভিক্ষুকরাও বেড়াতে গেছে কোনো না কোনো দেশে।

সে হতেই পারে, কাগজেই দেখছিলাম একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পেতে কোনো কোনো ভিক্ষুক বায়ু পরিবর্তনের নিমিত্তে প্র্রতি তিনমাস অন্তর একবার করে "ওভারসিস ট্যুর" করেন। এরা আসলে "কমার্শিয়াল ভিক্ষুক"। ঢাকা শহরে এদের আনাগোনা কিংবা উপদ্রব যাই বলি না কেন? এখনও বেশ চোঁখে পড়ে। এইসব কমার্শিয়াল ভিক্ষুকরা যে এই পেশাতে বেশ ভালই কামাচ্ছেন সেটা বেশ পরিস্কার!

ঘটনা এগুলো নয়, ঘটনা হলো আর একটা!

দেশে এখন প্রতিটি রাস্তার মোড়ে মোড়ে "এতিম খানা"। আর অধিকাংশ এতিমখানায় কিছু লোক রাস্তার পাশে বসে, কখনো কখনো বাস ট্রেন কিংবা লঞ্চে উঠে চাঁদা সাহায্য চান। চাঁদা চান এতিমদের থাকা-খাওয়া ভরণ-পোষণ আর বইখাতা কেনার কথা বলে। কারণ চাঁদার টাকাই মূলত উতস এতিমদের পিছনে ব্যয় করার জন্য। আর চাঁদাবাজদের বয়ানে মুগ্ধ হয়ে, কিছুটা পরলৌকিক পুণ্য অর্জনের জন্য যে-যার সমর্থ্যানুসারে সাহায্যও করে থাকেন। তবে সারাদেশে এখন কতগুলো এতিমখানা আছে, আর এতে কত ছাত্র আছে, তার কোনো জড়িপ কোনকালে হয়েছে কী না জানা নেই! 

প্রশ্ন এতিম ছাত্র এলো কোথায় থেকে? দশ-পনেরো বছর আগেও তো দেশে এত এতিমখানা ছিলো না!

প্রশ্ন আরও একটা আছে, সেটা হলো পিতা-মাতাহীন অথবা পিতা-মাতা পরিত্যক্ত শিশুরা কি সবাই ছাত্র? অর্থাত এতিমরা কি সবাই পুরুষ হয়েই জন্মায়? যদিও সঠিক তথ্য নেই, তথাপি সারাদেশে যত সংখ্যক এতিমখানা ছাত্রদের নিয়ে পরিচালিত হয়, আমার তো মনে হয় তার এক দশমাংশও সংখ্যক এতিমখানা ছাত্রীদের নিয়ে পরিচালিত হয় না! তাহলে "ছাত্রী এতিম" কিংবা "এতিম ছাত্রী" নেই কেন? আর এতিমদরদী এইসব পরিচালকরাই বা কেন মেয়ে এতিমদের জন্য সমসংখ্যক এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করছেন না? বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয়, এর মধ্যে জটিল কিছু "কিন্তু" আছে! আর কিন্তুটা মূলত হলো লাভ-অলাভ-এর হিসেব।

তাহলে কী ধরে নেওয়া যায় না এতিমখানা পরিচালনা এখন একটা ভালো ব্যবসা? 

বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

আমাদের বিবেকবোধ কী ধুঁয়ে যাচ্ছে?




এর থেকে বেদনাদায়ক চিত্র আর কী হতে পারে!



জানিনা। জানার ইচ্ছাও নেই। জানার ইচ্ছে নেই শিশুটি কোন জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র কিংবা দেশের সন্তান? এটি একটি  নিস্প্রান আর অবোধ এই তিন বছরের শিশুর ছবি, এটাই সত্য। 


জানিনা আমাদের মানবিকতা, বিবেকবোধ আর মনুষ্যত্ব নিস্প্রাণ এই শিশুটির মতো প্রতিনিয়ত ধুঁয়ে ধুঁয়ে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে কিনা? আমরা আর মানুষ থাকছি কিনা? জানিনা। জানার ইচ্ছেও করেনা। 

তবে শুধু সৃষ্টিকর্তার কাছে বিনীত প্রার্থনা, হে ঈশ্বর তুমি তোমার সৃষ্ট প্রতিটি শিশুর জীবন নিরাপদ আর নিস্কন্টক কর। 

তুমি তো সবই পার।