সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৫

শিক্ষকের মর্যাদা


কাজী কাদের নেওয়াজ
=================

বাদশাহ আলমগীর-
কুমারে তাঁহার পড়াইত এক মৌলভী দিল্লীর।
একদা প্রভাতে গিয়া
দেখেন বাদশাহ- শাহজাদা এক পাত্র হস্তে নিয়া
ঢালিতেছে বারি গুরুর চরণে
পুলকিত হৃদে আনত-নয়নে,
শিক্ষক শুধু নিজ হাত দিয়া নিজেরি পায়ের ধুলি
ধুয়ে মুছে সব করিছেন সাফ্ সঞ্চারি অঙ্গুলি।
শিক্ষক মৌলভী
ভাবিলেন আজি নিস্তার নাহি, যায় বুঝি তার সবি।
দিল্লীপতির পুত্রের করে
লইয়াছে পানি চরণের পরে,
স্পর্ধার কাজ হেন অপরাধ কে করেছে কোন্ কালে!
ভাবিতে ভাবিতে চিন্তার রেখা দেখা দিল তার ভালে।
হঠাৎ কি ভাবি উঠি
কহিলেন, আমি ভয় করি না’ক, যায় যাবে শির টুটি,
শিক্ষক আমি শ্রেষ্ঠ সবার
দিল্লীর পতি সে তো কোন্ ছার,
ভয় করি না’ক, ধারি না’ক ধার, মনে আছে মোর বল,
বাদশাহ্ শুধালে শাস্ত্রের কথা শুনাব অনর্গল।
যায় যাবে প্রাণ তাহে,
প্রাণের চেয়েও মান বড়, আমি বোঝাব শাহানশাহে।
তার পরদিন প্রাতে
বাদশাহর দূত শিক্ষকে ডেকে নিয়ে গেল কেল্লাতে।
খাস কামরাতে যবে
শিক্ষকে ডাকি বাদশা কহেন, ”শুনুন জনাব তবে,
পুত্র আমার আপনার কাছে সৌজন্য কি কিছু শিখিয়াছে?
বরং শিখেছে বেয়াদবি আর গুরুজনে অবহেলা,
নহিলে সেদিন দেখিলাম যাহা স্বয়ং সকাল বেলা”
শিক্ষক কন-”জাহপানা, আমি বুঝিতে পারিনি হায়,
কি কথা বলিতে আজিকে আমায় ডেকেছেন নিরালায়?”
বাদশাহ্ কহেন, ”সেদিন প্রভাতে দেখিলাম আমি দাঁড়ায়ে তফাতে
নিজ হাতে যবে চরণ আপনি করেন প্রক্ষালন,
পুত্র আমার জল ঢালি শুধু ভিজাইছে ও চরণ।
নিজ হাতখানি আপনার পায়ে বুলাইয়া সযতনে
ধুয়ে দিল না’ক কেন সে চরণ, স্মরি ব্যথা পাই মনে।”
উচ্ছ্বাস ভরে শিক্ষকে আজি দাঁড়ায়ে সগৌরবে
কুর্ণিশ করি বাদশাহে তবে কহেন উচ্চরবে-
”আজ হতে চির-উন্নত হল শিক্ষাগুরুর শির,
সত্যই তুমি মহান উদার বাদশাহ্ আলমগীর।”


[দু'টি কথা: সেই শিশু বয়সে পড়েছিলাম কবিতাটি, সবটুকু মনে ছিলো না। স্মৃতি হাতড়ে আর নেট ঘেঁটে পুরো কবিতাটি পেয়ে গেলাম। যদিও আজকের দিনে এইমতো পৌরানিক কবিতা নিতান্তই বে-রসা।  এখনকার সময়ে এসব কবিতার খাওতা নেই। এখনকার সময়ের বিষয়বস্তু নীতিশিক্ষা নয় বরং ক্ষমতাশিক্ষা। তাই তো সমাজের আজ এই দশা। 

সত্যি "লজ্জিত" বলা ছাড়া আর কী-ইবা বলার আছে?]

রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৫

গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি কি সোনালী-বেসিক তাজা করতে?

আজ একটি অন্য রকম গল্প শোনাব।

"দুই হাজার ছয় সালের কথা। সদ্য বিয়ে করেছি, মেসের জীবন ছেড়ে, ছোট্ট একটা দেড় রুমের বাসা ভাড়া নেই। খিলগাঁও, গোরানে। বাড়ির মালিক ব্যাংকার। মালকিন বাড়ির যাবতীয় দায়িত্ব পালন করেন। পাঁচ তলা বাড়ির এক বারান্দার দেড় রুম আর আড়াই রুমের দুটি ইউনিট প্রতি তলাতে, আমরা পাঁচ তলাতেই ভাড়া নিলাম। পানি-গ্যাস আর বিদ্যুতসহ একুনে মাসিক ভাড়া আটাশ'শ টাকা। আমাদের নতুন সংসার, চুলো দু-বেলা জ্বলবে ঠিকই, তবে তা খুব বেশি সময়ের জন্য নয়। সারাদিন, আর সব ভাড়াটিয়ার মতো অত-অত রান্না-বাড়িও আমাদের হবে না! তবুও সরকারিভাবে গ্যাস বিল তো ফিক্সড! পানিও বাড়িওয়ালা সব ভাড়াটিয়ার জন্য দুইশো পঁচিশ টাকা করে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আমার ধারণা ছিলো, বিদ্যুত বিলটা আমাদের একশ টাকা মাসে আসবে কিনা সন্দেহ! স্বামী-স্ত্রী সকাল সাতটায় বেড় হবো, সন্ধ্যে সাতটা বা তারও পরে ফিরবো। তাছাড়া তখনো ফ্রিজ কেনা হয় নি। যা একটা টিভি আছে! তাও দেখার সুযোগ কই? ওই শুক্কুরবারে যা একটু দেখা! তাতে শ'টাকার বেশি বিল হবার কথা নয়। সব ফ্ল্যাটে তো ফ্রিজ ওভেন আয়রন চলবেই, কোনো কোনো ইউনিটে, বিশেষ করে যারা উত্তর পাশের ফ্ল্যাটে থাকেন, তারা কেউ কেউ এসি ও চালান। তাই আমাদের ঘাড়ে বিদ্যুত বিলটা টেনে ভাড়াটা যদি একটুও, অর্থাত দু-একশো টাকা কমানো যায়! বৌকে এক শুক্রবারে পাঠালাম মালকিনের সাথে কথা বলতে! বউ আলাপ সেরে ঘরে ফিরে ফ্রিজ আর ওভেন কেনার জন্য তাগাদা দিচ্ছিলো দেখে ভাবলাম বোধ হয় 'চিড়ে ভিজে নি'। একটু বিস্তারিত জানার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করতেই বউ বলে উঠলো, 'হ্যা, আগামী মাস থেকে আমাদের জন্য ভাড়া একশো টাকা কম। তবে আন্টি বলেছেন- তোমরা এসি ডিসি ফ্যান ফ্রিজ হিটার-মিটার আয়রন-মায়রণ ওভেন-টোভেন যা কিছু চালাও-চালাও, না চালাও-না চালাও, আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমাদের পুরো বাড়ির বিদ্যুত বিল ফিক্সড। কোনো কম দেবার সুযোগ নেই। তো তোমরা যা খুশি, যত্তো খুশি, সব কিছু চালাতে পারো। বলো! কেন ফ্রিজ কিনবোনা? কেন ওভেন কিনবোনা? ফ্রিজ আর ওভেন থাকলে তো প্রতিদিন আমার দু'বার করে চুলোয় পুড়তে হবে না!' বৌয়ের কথা শুনে আমার তো চক্ষু কপালে!"

সংসার জীবন শুরুর কথাগুলো বন্ধু চিন্ময় যখন বলছিলো তখন আমি তন্ময় হয়ে শুনছিলাম। অবাক হয়েছিলাম ওর কথায়। তবে আকাশ থেকে পরছিলাম ও যখন বলল - 'জানিস ওই মিটার রিডার তিনটে ফ্ল্যাটের মালিক! তিনি স্যার মানুষ! বসে বসে অফিস সামাল দেন আর মাসিক বেতনে একজন লোক রাখা আছে, যার কাজ হলো প্রতিমাসে তার এলাকার গ্রাহকদের বিলের টাকা কালেকশন করা।'

মনে মনে নিজেকে গালি দিচ্ছিলাম, কেন এত কষ্ট করে পড়ালেখা করলাম! তার চেয়ে বরং ঐ মিটার রিডারের মতো মামা-খালা-চাচা কাউকে ধরে-ক'য়ে ঐজাতীয় "উপরি" আয়ের একটা চাকরি মেট্রিক পাশ করার পরই জোটানোর জন্য কেন লেগে পরলাম না!

বন্ধুর কথা বাদ থাক, এবার নিজের অভিজ্ঞতার একটু প্রকাশ ঘটাই!

আমি বাসাবোতে দীর্ঘদিন আছি। গত দু'হাজার বারো'র জুলাইয়ে উঠেছি একটা নতুন বাসায়। আড়াই কাঠার প্লটটিতে সাতশো স্কয়ার ফিট, কী সামান্য কিছু বেশি হলেও হতে পারে! প্রতি ফ্লোরে দুটি করে ফ্ল্যাট । নতুন বাড়ি, ছ'তলা। এক ডেভলপার কোম্পানি বাড়িটি ফিফটি-ফিফটি শেয়ারে নির্মান করছে, কাজ তখনো শেষ হয় নি। আমরা প্রথম ভাড়াটিয়া। আমাদের হপ্তাখানেক আগে শুধু ল্যান্ডঅনার উঠেছেন। তিন তলায় ওনাদের মুখোমুখি আমাদের ফ্ল্যাট।

বাড়িতে বিদ্যুতের লাইন, নির্মানকালীন কমার্সিয়াল লাইন ছিল। আর একটি ডাবল বার্ণার গ্যাসের লাইনের পারমিশন ছিলো। আমরা যেদিন উঠলাম, তড়িঘড়ি করে বাড়িওয়ালা অর্থাৎ ল্যান্ডওনার দোকান থেকে মোটা ধরনের বড় এক কয়েল প্লাস্টিক পাইপ নিয়ে আমাদের জন্য গ্যাসের ব্যবস্থা করে দিলেন। মাস তিনেকের মধ্যে বাড়িতে মোট ন'টি পরিবার উঠলো, সবার গ্যাস লাইন আমাদের মতই, সরাসরি রাইজার থেকে প্লাস্টিক পাইপে পেলো। ল্যান্ডওনার গ্যাস বিল বাবদ এক পয়সাও বেশি নেন না, সবার কাছ থেকে সরকারী বিধিমোতাবেকই চারশো পঞ্চাশ টাকা করে উঠান! কিছু একটা বন্দোবস্ত করা আছে গ্যাস অথরিটির সাথে, বিল বাবদ সংগৃহিত অর্থ নিয়মিত ভাগ হয়। যার সুবাদেই অনুমোদনহীন ঝুলন্ত আর অতিরিক্ত লাইনগুলো আর কাটা পরে না। 


এবারে গালগল্প থাক। এই সুযোগে একটু অন্য কথায় আসি। বর্তমানে কম আলোচিত, গৌণ একটা বিষয়ে একটু নজর দেই!


সারাবিশ্বে খনিজ জ্জ্বলানিকে বলা হয় "লিকুইড গোল্ড" বা "তরল সোনা"। কারণ জ্বালানি ছাড়া সভ্যতা যেমন অচল, তেমনি খনিজ তেল ও গ্যাস ছাড়া জ্বালানির যোগান অসম্পূর্ণ। পৃথিবীতে মোট ব্যবহৃত জ্বালানির সিংহভাগ যোগান আসে খনিজ তেল আর গ্যাস থেকে। সে কারণেই খনিজ তেল গ্যাসই মূলত "লিকুইড গোল্ড" নামে অভিহিত হয়ে থাকে। এই লিকুইড গোল্ডের সারাবিশ্বে এখন দরপতন চলছে সলিড গোল্ডের মতই। অবস্থা এমন! গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিন্ম অবস্থানে রয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে খনিজ জ্বালানি তেল ও গ্যাসের বর্তমান মূল্য। শুধু তাই নয়, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য আরও কমতে পারে। বৈশ্বিক ভু-রাজনৈতিক সমীকরণ বিশ্লেষণে এমনই সম্ভবনা তৈরী হয়েছে।


কিন্তু আমাদের অবস্থা ভিন্নতর, গত বিষ্যুতবারের কথা। সরকার এক ঘোষণায়, হঠাত করে গ্যাস আর বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছেন। গ্যাস বিলই এক ধাক্কায় দুইশো টাকা! বাড়িয়েছেন তো বাড়িয়েছেন! আবারও হাঁক পাড়ছেন, আবার দুই-তিন মাসের মধ্যে আবারও বাড়ানো হবে গ্যাস আর বিদ্যুতের দাম। এ যেন একেবারে মগের মুল্লুক! কথা বলবি, প্রতিবাদ করবি, তো মিটার বাড়তে থাকবে! আর কথাই বা বলবে কে? বিরোধিতা করারই বা কে আছে? সরকারী বেতনভুগিদের তো মুখে রা করার দরকার নেই! বেতন দ্বিগুন, তার উপর 'উপরি ইনকাম' তো আছেই! বেতনে হাত দেবার দরকার কী? আর বিরোধী দল! সে তো দূর্নীতির সাগরে সাঁতার কাটতে গিয়ে নিজেই ডুবে মরার দশা! দু'এক টি কানা খোঁড়া দল যাও একটু চিতকার চেচামেচি করছে, তা সরকারের গা করার মত কিচ্ছুটি নয়। 


স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের অবস্থা যদি এমন হয়, তাহলে অভ্যন্তরীণ বাজারে এই অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধি কেন?

বর্তমান সরকারের অগণিত ভালো কাজের মধ্যে এমন কিছু খারাপ কাজ আছে, যা সমস্ত ভালো কাজকে ছাপিয়ে যায়। সোনালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক দূর্নীতি, শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারী সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। আমলা-কর্মচারীদের দুর্নীতি মানুষের সহনশীলতাকে অতিক্রম করে ফেলেছে। সরকারী অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের অনেকেই দূর্নীতি আর লুট-পাটের অংশীদার হয়ে গাড়ি-বাড়িসহ বিলাসী জীবনযাপন করছে। পক্ষান্তরে মোট জনশক্তির নব্বইভাগেরও বেশি, যারা বেসরকারী ক্ষেত্রে কাজ করে জিডিপিতে সব থেকে বেশি অবদান রাখছে, তারা দিনকে দিন শুধু বঞ্চিতই হচ্ছেনা, সামাজিকভাবে সরকারী কর্মচারী-কর্মকর্তাদের তুলনায় পিছিয়েও পড়ছে।

তাহলে কী এটাই ঠিক যে, পঁচানব্বই শতাংশের বেশি বেসরকারী চাকুরে আর অগনিত সাধরণ মানুষকে বাড়তি বিলের বোঝা চাপিয়ে আদায়কৃত অর্থ দিয়ে শুধুমাত্র বিলোও পাঁচ শতাংশ সরকারী কর্মচারী-কর্মকর্তাদের, মিটার রিডার লাইনম্যানসহ দূর্নীতিবাজদের তোষণ আর বেসিক সোনালী ব্যাংকের লুট হওয়া টাকার ঘাটতিতে ধুঁকতে ব্যাংকগুলো তাজা করনের জন্য?


গৌতম হালদার

শুক্রবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৫

আমার কৈফিয়ত

কাজী নজরুল ইসলাম
==============
বর্তমানের কবি আমি ভাই, ভবিষ্যতের নই ‘নবী’
কবি ও অকবি যাহা বলো মোরে মুখ বুজে তাই সই সবি !
কেহ বলে, ‘তুমি ভবিষ্যতে যে
ঠাঁই পাবে কবি ভবীর সাথে হে !
যেমন বেরোয় রবির হাতে সে চিরকেলে –বাণী কই, কবি ?’
দুষিছে সবাই, আমি তবু গাই শুধু প্রভাতের ভৈরবী !
কবি বন্ধুরা হতাশ হইয়া মোর লেখা প’ড়ে শ্বাস ফেলে ।
বলে, কেজো ক্রমে হচ্ছে অকেজো পলিটিক্সের পাঁশ ঠেলে ।
পড়েনাক’ বই, ব’য়ে গেছে ওটা ।
কেহ বলে, বৌ-এ গিলিয়াছে গোটা ।
কেহ বলে, মাটি হ’ল হ’য়ে মোটা জেলে ব’সে শুধু তাস খেলে ।
কেহ বলে, তুই জেলে ছিলি ভালো, ফের যেন তুই যা’স জেলে ।
গুরু ক’ন, তুই করেছিস শুরু তলোয়ার দিয়ে দাড়ি চাঁচা ।
প্রতি শনিবারই চিঠিতে প্রেয়সী গালি দেন, ‘তুমি হাঁড়িচাঁচা !’
আমি বলি, ‘প্রিয়ে, হাটে ভাঙি হাঁড়ি-‌’
অমনি বন্ধ চিঠি তাড়াতাড়ি।
সব ছেড়ে দিয়ে করিলাম বিয়ে, হিন্দুরা ক’ন, আড়ি চাচা !
যবন না আমি কাফের ভাবিয়া খুঁজি টিকি দাড়ি, নাড়ি কাছা !

মৌ-লোভী যত মৌলভী আর 'মোল-লারা' ক'ন হাত নেড়ে,
'দেব-দেবী নাম মুখে আনে, সবে দাও পাজিটার জাত মেরে !'
ফতোয়া দিলাম কাফের কাজী ও,
যদিও শহীদ হইতে রাজী ও !
'আম পারা'-পড়া হাম-বড়া মোরা এখনো বেড়াই ভাত মেরে !'
হিন্দুরা ভাবে, 'পার্শী-শব্দে কবিতা লেখে, ও পা'ত-নেড়ে !
আনকোরা যত ননভায়োলেন্ট নন্-কো'র দলও নন্ খুশী ।
'ভায়োলেন্সের ভায়োলিন' নাকি আমি, বিপ্লবী -মন তুষি ।
'এটা অহিংস', বিপ্লবী ভাবে,
'নয় চরকরা গান কেন গা'বে ?'
গোঁড়া-রাম ভাবে নাস্তিক আমি, পাতি-রাম ভাবে কনফুসি !
স্বরাজীরা ভাবে নারাজী, নারাজীরা ভাবে তাহাদের অঙ্কুশি !
নর ভাবে , আমি বড় নারী -ঘেঁষা ! নারী ভাবে, নারী বিদ্বেষী ।
'বিলেত ফেরনী ?' প্রবাসী বন্ধু ক'ন, এই তব বিদ্যে ছি !
ভক্তরা বলে, 'নবযুগ-রবি !'-
যুগের না হই, হুজুগের কবি
বটি তো রে দাদা , আমি মনে ভাবি, আর ক'ষে কষি হৃদ- পেশী,
দু'কানে চশমা আঁটিয়া ঘুমানু, দিব্যি হ'তেছে নিদ্ বেশী !
কি যে লিখি ছাই মাথা ও মুন্ডু, আমিই কি বুঝি তার কিছু ?
হাত উঁচু আর হ'ল না তো ভাই, তাই লিখি ক'রে ঘাড় নীচু !


বন্ধু ! তোমরা দিলেনাক' দান,
রাজ-সরকার রেখেছেন মান !
যাহা কিছু লিখি অমূল্য ব'লে অ-মূল্যে নেন ! আর কিছু
শুনেছ কি, হুঁ হুঁ, ফিরেছে রাজার প্রহরী সদাই কার পিছু ?

বন্ধু ! তুমিতো দেখেছ আমায় আমার মনের মন্দিরে,
হাড় কালি হল, শাসাতে নারিনু তবু পোড়া মন-বন্দীরে !
যতবার বাঁধি ছেঁড়ে সে শিকল,
মেরে মেরে তারে করিল বিকল,
তবু যদি কথা শুনে সে পাগল ! মানিল না রবি-গান্ধীরে !
হঠাৎ জাগিয়া বাঘ খুঁজে ফেরে নিশার আঁধারে বন চিরে !

আমি বলি, ওরে কথা শোন ক্ষ্যাপা, দিব্যি আছিস খোশহালে !
প্রায় 'হাফ' নেতা হয়ে উঠেছিস, এবার এ দাঁও ফসকালে
'ফুল'-নেতা আর হবিনে যে হায় !
বক্তৃতা দিয়া কাঁদিতে সভায়
গুঁড়ায়ে লঙ্কা পকেটেতে বোকা এই বেলা ঢোকা ! সেই তালে
নিস্ তোর ফুটো ঘরটাও ছেয়ে, নয় পস্তাবি শেষকালে ।

বোঝেনাক' সে যে চারণের বেশে ফেরে দেশে দেশে গান গেয়ে
গান শুনে সবে ভাবে, ভাবনা কি ! দিন যাবে এবে পান খেয়ে ।
রবেনাক' ম্যালেরিয়া মহামারী,
স্বরাজ আসিছে চ'ড়ে জুড়ি-গাড়ী,
চাঁদা চাই, তারা ক্ষুধার অন্ন এনে দেয়, কাঁদে ছেলে-মেয়ে ।
মাতা কয়, ওরে চুপ্ হতভাগা, স্বরাজ আসে যে, দেখ্ চেয়ে !

ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত , একটু নুন,
বেলা ব'য়ে যায়, খায়নিক' বাছা, কচি পেটে তার জ্বলে আগুন ।
কেঁদে ছুটে আসি পাগলের প্রায়,
স্বরাজের নেশা কোথা ছুটে যায় !
কেঁদে বলি, ওগো ভগবান তুমি আজিও আছ কি ? কালি ও চুন
কেন ওঠেনাক' তাহাদের গালে, যারা খায় এই শিশুর খুন ?
আমরা তো জানি, স্বরাজ আনিতে পোড়া বার্তাকু এনেছি খাস ।
কত শত কোটী ক্ষুধিত শিশুর ক্ষুধা নিঙাড়িয়া কাড়িয়া গ্রাস
এল কোটী টাকা, এল না স্বরাজ !
টাকা দিতে নারে ভুখারি সমাজ ।

মা'র বুক হতে ছেলে কেড়ে খায়, মোরা বলি, বাঘ, খাও হে ঘাস !
হেরিনু, জননী মাগিছে ভিক্ষা ঢেকে রেখে ঘরে ছেলের লাশ !
বন্ধু গো, আর বলিতে পারি না, বড় বিষ-জ্বালা এই বুকে,
দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি, তাই যাহা আসে কই মুখে,
রক্ত ঝরাতে পারি না তো একা,
তাই লিখে যাই এ রক্ত-লেখা,
বড় কথা বড় ভাব আসেনাক' মাথায়, বন্ধু, বড় দুখে !
অমর কাব্য তোমরা লিখিও, বন্ধু, যাহারা আছ সুখে !
পরোয়া করি না, বাঁচি বা না-বাঁচি যুগের হুজুগ কেটে গেলে,
মাথার ওপরে জ্বলিছেন রবি, রয়েছে সোনার শত ছেলে ।
প্রার্থনা ক'রো-যারা কেড়ে খায় তেত্রিশ কোটী মুখের গ্রাস,
যেন লেখা হয় আমার রক্ত-লেখায় তাদের সর্বনাশ ।
=======================================
তোমার কবিতায় তোমাকে বিনম্র শ্রদ্ধা, হে কালজয়ী কবি !

বুধবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৫

উত্তরণের আছে কী কোনো পথ?

'ঘুড়ির হাতে বাঁশের নাটাই উড়তে থাকে ছেলে 
বড়শি দিয়ে মানুষ গাঁথে মাছেরা ছিপ ফেলে'


লাইন দু'টি মনে আছে। কে লিখেছিলেন, মনে নেই। সম্ভবত বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত ছড়াকার ও কবি সুকুমার রায়ের লেখা। কবে পড়েছিলাম, তা মনে নেই। কোথায় পড়েছিলাম তাও মনে নেই। তবে তা বেশ মনে আছে, ছড়াটি যে আমাদের দেশের কোনো শ্রেণীতেই পাঠ্য বইয়ের অন্তর্ভুক্ত ছিলনা। থাকবে কী করে? এখানে তো মানুষকে সরেষ আর সাহিত্যানুরাগী মানুষ বানানোর জন্য পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করার সুযোগ নেই। বরং এখানে দরকার ধর্ম ব্যবসার প্রসারের কলাকৌশল সম্বলিত ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্থা। সরকারকে তো তাই করতে হবে। জনচাহিদা বলে কথা!

এসব আবোল তাবোল পড়ে লাভ কী? এখানে না আছে নৈতিক শিক্ষার প্রয়োজন, না আছে উদারনৈতিক সাহিত্য আর মৌলিক শিক্ষার প্রয়োজন। এখনকার সময়ে আদর্শলিপি'র শিক্ষা "ঔ তে ঔদার্য্য অতি মহৎ গুণ" দেখানোর টাইম কই? তার বদলে "ক -তে কঠোর হও কসাইর মতো" মতো জীবনমুখী! ধর্মমুখী! বাস্তবমুখী! সৃজনশীল! কত কায়দার শিক্ষায় জাতি শিক্ষিত হচ্ছে!


যাক সে কথা, একটু ভাবলেই বোঝা যায় এদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে, স্বাধীন দেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিগুলোর ক্ষমতা কেন্দ্রিক দুর্বৃত্তায়ন, দুর্নীতিগ্রস্থ আর সমাজবিরোধী অপশক্তিগুলির শক্তিমত্তা, আরও "প্রকাশযোগ্য নহে" এমন অসংখ্য অসংখ্য বিষয় বিবেচনায় নিলে শিশুতোষ আর মজার এ ছড়াটি এখন কী ভীষণ রকমের বাস্তব!

কথা একটাই, এর থেকে উত্তরণের আছে কী কোনো পথ?

সামু ব্লগে প্রকাশিত

সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৫

আমি এখন কী করব?


বাজার করার সুযোগ খুব-একটা আমার হয়না। তবে দু-একদিন অফিস ছুটির পর ফিরতি পথে হাতের কাছে যা পাই, আর কিছু আকস্মিক প্রয়োজন - যা আমাদের ঘরে নেই, অথচ তখনই দরকার, এরূপ কোনো কেনাকাটার প্রয়োজন হলে কিনতে হয়। এর বাইরে কালে ভদ্রে, যদি ছেলেটি আমার বায়না ধরে, 'বাবা চলোনা! আজ তোমার সাথে বাজারে যাব'। তাহলে কাছাকাছি 'স্বপ্ন'। ব্যাস, এতখানিই আমার বাজার করার অভিজ্ঞতা!

আমি বেসরকারী চাকুরে। আমাকে অফিস করতে হয় ন'টা -পাঁচ'টা নয়, ন'টা-সাত'টা। কখনও কখনও নয়, প্রায়ই সেটা হয়ে যায় ন'টা - আট'টা কিংবা ন'টা-ন'টা। তার পর ঢাকা শহরের ট্র্যাফিক জ্যাম ঠেলে বাসায় ফিরতে ফিরতে কমসে-কম রাত দশ'টা কখনও কখনও এগারো'টাও হয়ে যায়। বাসায় ফিরে দেখি ছেলেরা ঘুমিয়ে পড়েছে কিংবা ঘুমের আয়োজনে আছে। আর সকালবেলা ন'টার মধ্যে অফিসে ঢুকতে হলে অতি-অবশ্যই সাত'টা- বড়জোড় সাত-টা পনেরো'র মধ্যে বাসা থেকে বের হতেই হবে, নতুবা নির্ঘাত "লেট মার্ক"। 


এই যখন দিনপঞ্জি, তখন আর বাজার করি কখন? অনাচ-পাতি থেকে শুরু করে ছেলেদের, আমার জামা-প্যান্ট, গেঞ্জি-জাঙ্গিয়া মোজা অবধি সব কেনাকাটা বিয়ের পর থেকেই ছেড়ে দিয়েছি। ছেড়ে দিয়েছি বলা ঠিক নয়, বরং বলা ভালো ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। নিজের পছন্দ অপছন্দ রুচিবোধ সব সেই কবেই জলাঞ্জলি দিয়েছি! বিসর্জন দিয়েছি সামাজিক আচারানুষ্টানও। ভাগ্যিস মার্ক জুকারবার্গ ব্যাটা ফেসবুকটা বানিয়েছিল! নতুবা এতদিনে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের কাছে হয়ে যেতাম আমি "আফ্রিকান জঙ্গলের অধিবাসী"!

বলার অপেক্ষা রাখে না- সরকারী চাকুরেদের সুইপার থেকে শুরু করে উপরে সব শ্রেনীর কর্মকতাদের নিরানব্বই শতাংশই যেমনটি করে থাকেনযারা বেসরকারী চাকুরে, তাদের আটানব্বই শতাংশেরই "বাম ড্রয়ারে" কোনো কাজ হয় না, টাকা ঢুকে না, ঢোকার সুযোগ-ও থাকেনা। মাস শেষে যা স্যালারি! তা থেকেই চালিয়ে নিতে হয় পুরো মাস। এর বাইরে কোনো জরুরি প্রয়োজন! তো ঋণ করা ছাড়া কোনো বিকল্প থাকে না। আবার ঋণ করলে শোধ দিতে গিয়ে পড়তে হয় মহাবিপদে! মাসের পর মাস মাসিক খরচ থেকে দু'টাকা - পাঁচ'টাকা করে বাঁচিয়ে তবেই না সম্ভব হয় ঋণ শোধ। 

এই যখন অবস্থা! তখন সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন একলাফে দ্বিগুণ। এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে তাতে জুলাই-১৫ থেকেই তাদের বেতন বর্ধিত হারে পাবেন; যার পরিবর্তন নিম্নরূপ;



এদিকে বেতন বৃদ্ধির খবরে বাজারে রীতিমতো আগুনের ছোঁয়াচ; একেবারে যুদ্ধকালীন অবস্থা যাকে বলে! যে ডিম পনের দিন আগে ছিল আশি-পঁচাশি টাকা ডজন- তা একলাফে একশকুড়ি -একশত্রিশ টাকা। বাজারে কাঁচাঝাল এখন কেজি দু'শো কুড়ি টাকা, পেয়াজ- নব্বই টাকা। এক কেজি পটল ষাট থেকে সত্তর টাকা, কাঁকরোল আশি টাকা, পেঁপে চল্লিশ, বরবটি ষাট। কেজি প্রতি পঞ্চাশ টাকার কমে কোনো সবজি কিনতে চাইলে বাজারে পাওয়া যাবেনা, যেতে হবে ভাগাড়ে। তবেই মিলতে পারে।

দ্রব্যমূল্য দিগুণ নয় চারগুণ- পাঁচগুণ হলেও সরকারী চাকুরেদের গায়ে লাগবে না, কারণ বেতন তো দ্বিগুণ হলোই! তার উপরে উপরি ইনকাম! প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেনীর কর্মকর্তাদের কথা বাদই দিলাম, এই ঢাকা শহরে অনেক চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীরও বাড়ি রয়েছে! তাও অনেকের আবার একটা নয়, একাধিক! অথচ যারা বেসরকারী চাকুরে, তাদের অনেকেই বাসাভাড়া দিতে দিতে আর ফিবছর বর্ধিত বাসাভাড়ার চাপ সহ্য করতে না পেরে কম ভাড়ার বাড়ি খুঁজে নিন্মমানের জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছে। পিছিয়ে পড়ছে সামাজিক গতিময়তা থেকে। দূরে সরে যাচ্ছে আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে আর ছোট হতে হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের কাছে। 

শুধু আমার কথাই বলছিনা, অধিকাংশ বেসরকারী চাকুরেদের এই বাজারে দুরাবস্থার কথা ভেবে সরকার কিছু একটা পদক্ষেপে নেবে, সেই ভাবনা নিঃসন্দেহে দিবাস্বপ্ন। অথচ দ্রব্যমূল্য, বর্ধিত বাসাভাড়া, প্রতিবেশী সরকারী চাকুরেদের অবৈধ আয়ে বিলাসী জীবন যাপন, সব মিলিয়ে বেসরকারী চাকুরেদের প্রাণ এখন ওষ্ঠাগত। জীবন এখন বিপন্ন এ অবস্থায় পরিবার-পরিজন নিয়ে দ্রুত পরিবর্তনশীল এই সমাজে নির্দিষ্ট আর সীমিত আয়ের বেসরকারী চাকুরেদের জীবন ধরণের ন্যুনতম উপায়ই যখন অবশিষ্ট নেই- তখন আমার মতো অনেকের নিজের কাছে একটাই জিজ্ঞাস্য-

এখন আমি কী করব?



শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৫

ঝড়, নারী ও নর

ক্ষুদ্র জীবনেও অবশিষ্ট আগামী দিনগুলি নিয়ে আমার যত ভাবনা! 
দিনরাত উদভ্রান্তের মতো ছুটে চলা, এ রাজ্য থেকে ভাবনার সে রাজ্যে;
কখনও আন্দোলিত হই, কখনও শিহরিত হই সুমুখে আলোক নাচন দেখে!
জীবন তো নয়, আমার কাছে 'সময়' যেন বয়ে চলা বিধ্বংশী ঝড়!
তুমি তো আছো বেশ!
এসবে তোমার আঁচ লাগেনা, এখন তোমার দুষ্টু সময়!

চতুর্মাত্রিক-এ প্রকাশিত

০৪ জুন-২০১৫ ইং 

বুধবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৫

প্রবীর সিকদার-এর হাজতবাসে যে সত্য প্রতিষ্ঠিত হলো !

প্রবীর সিকদার'রা সব সময়ে জাতির হিতার্থে নিবেদিত প্রাণ। তারা জাতির জন্য যা কিছু করে, মন থেকেই করে। কোন হালুয়া রুটির জন্য লোভাতুর হয়ে করে না।

তবে প্রবীর সিকদারদের সমস্যাটা হয় বারবার অন্য কারনে। নির্মোহ এই সিকদার'রা বারবারই ভুলে যায় এই বাংলাদেশে সবাই তার বা তাদের মতো ক্ষুধা তেষ্টা পরিহার করে বাচতে পারে না। সবার ক্ষিধে আছে। তেষ্টা আছে। আছে ক্ষমতায় যাবার, ক্ষমতা দেখানোর আর ক্ষমতা ধরে রাখার সতত চেষ্টা। আর এই কাজে প্রবীর সিকদারদের সততা নিসন্দেহে বড় বাধা।

তো! প্রবীর সিকদার'রা জেল খাটবেনা তো কী জেল খাটবে ক্ষমতালোভী, দখলদার, লুটেরা আর রাজাকাররা?

হতেই পারে না।

জেল খাটুক আর রিমান্ডেই থাকুক, যাই হোক না কেন; এ কথা দিবালোকের মতো পরিস্কার যে, এত দিন যা ছিল কানাঘুষা, যা এতদিন সবাই আড়ালে আবডালে বলতো, তা আসলে শতভাগ নির্ভুল আর সূর্যালোকের মতো দীপ্ত। কারণ যদি এর মধ্যে বিন্দুমাত্রও কৃত্রিমতা থাকতো, তাহলে প্রবীর সিকদার-এর গ্রেফতার নিয়ে দেশের আপামর জনসাধারনের এই যে এত উত্কন্ঠা! এত উদ্বেগ! এসবের কিছুই থাকত না। 

যাক, এবার শান্তনা এটাই; শেখ হাসিনা'র সরকার যখন রাজাকারদের বিচার শুরুই করেছেন, শেষ একদিন না একদিন হবেই।

এই শেখ হাসিনা সরকার শেষ করতে না পারলেও পরের কোন না কোন সরকার নিশ্চয়ই শেষ করবে। অন্তত একটি রাজাকারও এই বাংলার মাটিতে বিনা বিচারে মাফ পেয়ে যেতে পারবে না, সেটাই বা কম কিসে!

বিডিনিউজ ব্লগে প্রকাশিত